জিজ্ঞাসা-১৫৭: জাহান্নামের
দরজাসমূহ বন্ধ দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে? আযাব বন্ধ থাকে না নতুন করে কেউ জাহান্নামে প্রবেশ করে না? আর রমজান
মাসে মারা গেলে জান্নাতী এর ব্যাখ্যা কি ?
হাফেজ মাওলানা সাজ্জাদ হোসেন, বগুড়া থেকে---
জবাব: জাযাকাল্লাহু
খয়রান আমার ভাই সাজ্জাদ হোসেনকে, তিনি একটি খুবই জরুরি একটি
এলমি সওয়াল করেছেন, কথায় আছে,
সওয়াল
(বুঝা) জ্ঞানের অর্ধেক। আপনার প্রশ্নকে সহজভাবে বুঝার জন্য কয়েকটি ভাবে ভাগ করেছি:-
প্রশ্ন: ক। জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে?
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «إِذا دخل شهر رَمَضَانُ فُتِحَتْ أَبْوَابُ السَّمَاءِ» . وَفِي رِوَايَةٍ: «فُتِّحَتْ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ وَغُلِّقَتْ أَبْوَابُ جَهَنَّمَ
وَسُلْسِلَتِ الشَّيَاطِينُ» . وَفِي رِوَايَةٍ: «فُتِحَتْ أَبْوَابُ الرَّحْمَةِ
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ)বলেছেনঃ মাহে রমাযান (রমজান) শুরু হলে
আকাশের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। অন্য এক বর্ণনায় আছে, জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া
হয়। জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। শয়তানকে শিকলবন্দী করা হয়। অন্য এক
বর্ণনায় আছে, রহমতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। বুখারী ১৮৯৯, ৩২৭৭, মুসলিম
১০৭৯, নাসায়ী ২০৯৯, ২০৯৭, ২১০২, আহমাদ ৭৭৮০, মুসান্নাফ
আবদুর রাযযাক ৭৩৮৪, ৭৭৮১, ৯২০৪,
শুআবূল ঈমান ৩৩২৬, সহীহ ইবনু হিববান ৩৪৩১।
মুহাদ্দিসিনে কেরাম এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া এবং
জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেওয়ার কয়েকটি উদ্দেশ্য রয়েছে-
০১.
জাহান্নামের দরজা বন্ধ থাকার অর্থ হলো জাহান্নামেন কর্ম
থেকে বেঁচে থাকা সহজ। নফস-শয়তানকে দমন করা রমজানে সহজতর
হয়।
০২.
বাক্যটি হয়তো হাকিকি (বাস্তব) অর্থেই ব্যবহার হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহ
তাআলা ফেরেশতাদের জন্য রমযান মাস প্রবেশের আলামত এবং এর পবিত্রতার প্রতি সম্মান
প্রদর্শনের আলামত হিসেবে, রমজানে জান্নাতের দরজা খুলে দেন আর
জাহান্নামে দরজা বন্ধ করে দেন।
০৩.
আবার কথাটি রূপক অর্থেও হতে পারে। রূপক অর্থে হলে জান্নাতের দরজা
খুলে দেওয়ার অর্থ হবে, বেশি বেশি সওয়াব লিখে দেওয়া আর
জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেওয়ার অর্থ হবে বেশি বেশি ক্ষমা করা। এই অর্থটি সুদৃঢ়
হয়ে যায় অন্য বর্ণনার মাধ্যমে, যেই বর্ণনায় এসেছে, فتحت أبواب الرحمة (রহমতের দরজা খুলে
দেওয়া হয়)
০৪.
অথবা রূপক অর্থ এও হতে পারে যে- এই মাসে আল্লাহ তাআলা
বান্দার জন্য যেসকল নেক কাজের তৌফিক দেন, যেমন রোজা, কিয়ামুল
লাইল ও অন্যান্য কেন কাজ; পাশাপাশি আল্লাহকর্তৃক নিষিদ্ধ যে
সব কাজ থেকে বিরত থাকার তৌফিক দেন, এগুলোই জান্নাতের দরজা
খুলে দেওয়া এবং জাহান্নামের দরজা বন্দ করে দেওয়ার দ্বারা উদ্দেশ্য। কেননা এই নেক
কাজগুলো করা আর নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকাই তো জান্নাতে প্রবেশ করা এবং জাহান্নাম
থেকে মুক্তির কারণ। সূত্র: ইকমালুল মুলিম, ফাতহুল বারি : ৪/৫
প্রশ্ন: খ। আযাব বন্ধ থাকে না নতুন করে কেউ জাহান্নামে প্রবেশ করে না? আর রমজান
মাসে মারা গেলে জান্নাতী এর ব্যাখ্যা কি ?
উত্তর: খ। আমরা প্রথমে উভয় প্রকারের দলীল জানবো, তারপর পর্যালোচনা করবো।
কবরের আজাবের দলীল
কুরআনের বানী-
আল্লাহ
তাআলা ফেরাউনের সম্প্রদায় সম্পর্কে বলেন فَوَقَاهُ اللَّهُ سَيِّئَاتِ
مَا مَكَرُوا وَحَاقَ بِآَلِ فِرْعَوْنَ سُوءُ الْعَذَابِ. النَّارُ يُعْرَضُونَ عَلَيْهَا غُدُوًّا وَعَشِيًّا
وَيَوْمَ تَقُومُ السَّاعَةُ أَدْخِلُوا آَلَ فِرْعَوْنَ أَشَدَّ الْعَذَابِ. ‘ তাদের সকাল-সন্ধ্যা জাহান্নামের
সামনে উপস্থিত করা হয়। যেদিন কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে, সেদিন
বলা হবে, তোমরা ফেরাউনের সম্প্রদায়কে কঠিন শাস্তির মধ্যে
ঢুকিয়ে দাও। সুরা : মুমিন (গাফির), আয়াত : ৪৬
অন্য আয়াতে এসেছে,
অচিরেই
আমি (আল্লাহ) তাদের দুইবার আজাব দেব। তারপর তাদের নিয়ে যাওয়া হবে ভয়াবহ আজাবের
দিকে। সুরা তাওবা-১০১
হাদিসের বানী
আনাস রা. হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
الْعَبْدُ إِذَا وُضِعَ فِي
قَبْرِهِ وَتُوُلِّيَ وَذَهَبَ أَصْحَابُهُ حَتَّى إِنَّهُ لَيَسْمَعُ قَرْعَ
نِعَالِهِمْ أَتَاهُ مَلَكَانِ فَأَقْعَدَاهُ فَيَقُولاَنِ لَهُ مَا كُنْتَ
تَقُولُ فِي هَذَا الرَّجُلِ مُحَمَّدٍ فَيَقُولُ أَشْهَدُ أَنَّهُ عَبْدُ اللهِ
وَرَسُولُهُ فَيُقَالُ انْظُرْ إِلَى مَقْعَدِكَ مِنْ النَّارِ أَبْدَلَكَ اللهُ
بِهِ مَقْعَدًا مِنْ الْجَنَّةِ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَيَرَاهُمَا
جَمِيعًا وَأَمَّا الْكَافِرُ أَوْ الْمُنَافِقُ فَيَقُولُ لاَ أَدْرِي كُنْتُ
أَقُولُ مَا يَقُولُ النَّاسُ فَيُقَالُ لاَ دَرَيْتَ وَلاَ تَلَيْتَ ثُمَّ
يُضْرَبُ بِمِطْرَقَةٍ مِنْ حَدِيدٍ ضَرْبَةً بَيْنَ أُذُنَيْهِ فَيَصِيحُ صَيْحَةً
يَسْمَعُهَا مَنْ يَلِيهِ إِلاَّ الثَّقَلَيْنِ
“বান্দাকে যখন তার কবরে রাখা হয় এবং তাকে পেছনে রেখে তার সাথীরা
চলে যায় (এতটুকু দূরে যে,) তখনও সে তাদের জুতার শব্দ শুনতে
পায়। এমন সময় তার নিকট দু’জন ফেরেশতা এসে তাকে বসিয়ে দেন।
অতঃপর তাঁরা প্রশ্ন করেন: এই ব্যক্তি মুহাম্মদ
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! তাঁর সম্পর্কে তুমি কী বলতে?
তখন সে বলবে: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি
আল্লাহ্র বান্দা এবং তাঁর রাসূল।
তখন তাঁকে বলা হবে, জাহান্নামে তোমার অবস্থানের জায়গাটি দেখে
নাও, যার পরিবর্তে আল্লাহ তা‘আলা তোমার
জন্য জান্নাতে একটি স্থান নির্ধারিত করেছেন।
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: তখন সে দু’টি স্থান একই সময় দেখতে পাবে।
আর কাফির বা মুনাফিক বলবে: আমি জানি না। অন্য লোকেরা যা বলত
আমিও তাই বলতাম।
তখন তাকে বলা হবে: না তুমি নিজে জেনেছ, না
কুরআন পড়ে শিখেছ।
অতঃপর তার দু’ কানের মাঝখানে লোহার মুগুর দিয়ে এমন জোরে
আঘাত করা হবে, যাতে সে চিৎকার করে উঠবে। তার আশেপাশের সবাই
তা শুনতে পাবে মানুষ ও জিন ছাড়া।
বুখারী-১৩৩৮-সহিহ মুসলিম-২৮৭০, ইসলামিক
ফাউন্ডেশন: ১২৫৭
নবি কারিম (ﷺ) বলতেন- اللَّهُمَّ إنِّي أعُوذُ
بِكَ مِنَ العَجْزِ والكَسَلِ والجُبْنِ والبُخْلِ والهَرَمِ وعَذابِ القَبْرِ
হে আল্লাহ ! আমি তোমার কাছে আশ্রয়
প্রার্থনা করি ব্যর্থতা, অলসতা, ভীরুতা,
কৃপণতা, বার্ধক্য ও কবরের আজাব থেকে। সহিহ মুসলিম-৬৩৬৭
রমজান/শুক্রবারে মৃত্যুবরণ করলে আজাব মাফের দলীল:
হাদিস নং-০১
ইমাম রজব হাম্বলি তার কিতাব ‘আহলুল কুবুর ওয়া আহওয়ালু আহলিহা ইলান নুশুর’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন-
روى باسناد ضعيف عن انس بن مالك
ان عذاب القبر يرفع عن الموتي في شهر رمضان
আনাস (রা.) থেকে দুর্বল সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, রমজন মাসে মৃত ব্যক্তি থেকে
কবরের আজব উঠিয়ে নেওয়া হয়। (আহলুল কুবুর ওয়া আহওয়ালু আহলিহা
ইলান নুশুর, পৃষ্ঠা : ১০৫
হাদিসটির সনদ সম্পর্কে মতামত:
ইবনে রজব হাম্বলি (রহ.) উপরিউক্ত রেওয়ায়েতের কোনো সনদ
উল্লেখ করেননি; আবার হাদিসটি কোন কিতাবের তাও উল্লেখ করেননি; অথচ এর
পরক্ষণেই তিনি জুমার দিনে মৃত্যু-সংক্রান্ত হাদিসটি মুসনাদে আহমদ এবং সুনানে
তিরমিজির উদ্ধৃতিতে উল্লেখ করেছেন। এটি যদি হাদিসের কোনো কিতাবে থাকতো তাহলে
অবশ্যই এর সূত্র উল্লেখ করতেন।
আকিদা শাস্ত্রের বিশিষ্ট ইমাম মুহাম্মদ ইবনে আহমদ ইবনে
সালেম ইবনে সুলায়মান আস সাফারিনি (রহ.) ইবনে রজব হাম্বলি (রহ.)-এর পূর্বোক্ত কথা
অর্থাৎ রমজানে কবরের আজাব মাফ হয়ে যায় উপরিউক্ত বক্তব্য এবং কালাম শাস্ত্রের ইমাম
নাসাফি (রহ.)-এর এ জাতীয় একটি বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন-
‘এটা তো ধারণামাত্র, যার স্বপক্ষে কোনো দলিল
নেই। সুতরাং যে ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর হাদিসের সামান্য স্বাদও আস্বাদন করেছে,
সে এধরনের হাদিসের দিকে কর্ণপাত করবে না। কেননা ইবনে রজব (রহ.) তো
দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন যে, কবরের আজাব রমজান মাসব্যাপী উঠিয়ে
নেওয়া হয়; অথচ জানা কথা হাদিসটি জয়িফ। এই ধরনের বড় বিষয়ে
(আকিদার বিষয়ে) জয়িফ হাদিসের ওপর নির্ভর করা হয় না। আল-বুহুরুজ জাখিরাহ : ১/২৪৬
হাদিস সং-০২
হযরত ইবনে মাসউদ
রা. থেকে বর্ণিত হাদিস-
من وافق موته عند انقضاء رمضان
دخل الجنة
রমজান সমাপ্তির সময়ে যার মৃত্যু সংঘটিত হয় সে জান্নাতে প্রবেশ
করবে। আবু নুআইম আসফাহানি, হিলইয়াতুল আওলিয়া : ৫/২৩
হাদিসটি সনদের মান:
হাদিসের একজন বর্ণনা হচ্ছেন, নাসর
ইবনে হাম্মাদ। তিনি নিতান্তই দুর্বল। এমনকি ইয়াহইয়া ইবনে মুঈন (রহ.) তাকে
মিথ্যাবাদী বলেছেন। আর আবুল ফাতাহ আজদি (রহ.) বলেন, সে একটি
হাদিস জাল করেছে।
হাদিস নং-০৩
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. সূত্রে বর্ণিত হয়েছে
যে, নবীজী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَمُوتُ
يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَوْ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ إِلَّا وَقَاهُ اللهُ فِتْنَةَ الْقَبْرِ
যেকোনো মুসলমান জুমুআর দিনে অথবা রাতে মৃত্যু বরণ করবে, আল্লাহ তাআলা তাকে কবরের ফিৎনা থেকে বাঁচিয়ে রাখবেন।-মুসনাদে আহমদ: 11/147; তিরমিযি, হাদিস 1074
হাদিসটির সনদের মান: ইমাম তিরমিজি রহ. হাদিসটির সনদ গরিব।
البَرَكةُ مع أكابِرِكم
الراوي
: عبدالله بن عباس |
المحدث : السفاريني الحنبلي | المصدر
: شرح كتاب الشهاب |
الصفحة أو الرقم
: 48 | خلاصة
حكم المحدث
: إسناده صحيح |
التخريج : أخرجه ابن حبان
(559)، والطبراني في
((المعجم الأوسط)) (8991)،
وابن عدي في
((الكامل في الضعفاء))
(2/77)
হাদিস নং-০৪
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে কোনো মুসলমান জুমার দিন কিংবা
রাতে মৃত্যুবরণ করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তাকে কবরের ফেতনা থেকে নিরাপদ রাখেন।'
মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি, বাইহাকি,
মিশকাত
হাদিসটির ব্যাখ্যায় এসেছে, এখানে ফেতনা দ্বারা কবরের
মুনকার-নাকিরের জিজ্ঞাসাবাদের কথা বোঝানো হয়েছে।
উভয় প্রকার দলীলের সমন্বয়:
১. গুনাহগারের জন্য কবরের আজাবের বিষয়টি কোরআন হাদিসের অকাট্য দলিল দ্বারা
প্রমাণিত ( আল্লামা ইবনে কায়য়্যুম রহ. বলেন,
কবরে আজাব-সুখ সম্পর্কে ৫০ মুতাওয়াতির হাদিস
রয়েছে)। পক্ষান্তরে রমজানে মারা
গেলে আজাব মাফ তা অকাট্যভাবে প্রমাণিত নয়।
আর হাজারো অপরাধ করে জুমা-রমজানে মারা গেলেই মুক্তি পাবে কুরআন-হাদিস
বিরোধী। মুক্তির কথা ঈমান ও আমলের সাথে সম্পর্কযুক্ত। যেমন,
‘সময়ের কসম! নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। তারা ছাড়া যারা
ঈমান এনেছে এবং সৎ কাজ করেছে।’ সুরা আসর : আয়াত ১-২
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন, ‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনে এবং সৎ কাজ করে, তাদের অভ্যর্থনার জন্য আছে ফেরদাউস বেহেশত। সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে; ওই স্থানের পরিবর্তে তারা অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হওয়াও কামনা করবে না।’ সুরা কাহফ : আয়াত ১০৭-১০৮
২. কেউ হয়তো বলতে পারেন, হাদিস দুর্বল হলে কী সমস্যা, দুর্বল হাদিস তো আমলের
ফজিলতের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য। না, এটি আকিদা; এটি ফাজায়েলের বিষয় নয়। আর আকিদার ক্ষেত্রে দুর্বল হাদিস কখনোই গ্রহণযোগ্য
হতে পারে না।
৩. আলী কারী রহ. তাঁর ‘মিনাহুর রওদিল আযহার ফি শরহে
ফিকহুল আকবার (পৃ. ২৯৫-২৯৬) এ একথাটিই বলেছেন। তিনি
বলেন-
ثبت في الجملة ان من مات يوم
الجمعة او ليلة الجمعة يرفع العذاب عنه الا أنه لا يعود اليه الي يوم القيامة فلا اعرف
له اصلا
‘‘জুমার দিনে বা জুমার রাতে যে মারা যাবে তার থেকে কবরের আজাব উঠিয়ে নেওয়া হবে, এটা মোটামুটি প্রমাণিত। তবে
কিয়ামত পর্যন্ত আর (আজাব) ফিরে আসবে না একথার কোন ভিত্তি আমার জানা নেই।’’ মিনাহুর রওদিল আজহার ফি শরহে ফিকহুল আকবার :
২৯৫-২৯৬
৪. শিরক
ব্যতিত অন্য যেকোনো আল্লাহ বান্দাকে মাফ করতে পারেন।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন
বলেন, إِنَّ
اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا
دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ নিশ্চই
আল্লাহ শিরক ক্ষমা করবেন না এবং শিরক ছাড়া অন্য অপরাধের মধ্যে যেগুলো চান ক্ষমা
করবেন। -সূরা নিসা- ৪৮
সুতরাং প্রমাণিত হলো
রমজানে মারা গেলেই নাজাত পাবে, এ কথা সহিহ নয়।
والله اعلم بالصواب
উত্তর দিচ্ছেন, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক (বগুড়া)
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন