জিজ্ঞাসা: ১২৬- আল-বুরহান সকল
সদস্যদের আমার ছালাম। আসসালামুআলাইকুম আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর
রহমতে ভালো আছি। পর জরুরি জানা প্রয়োজন যে কোন জীবের ছবি বা কাঠে খোদাই করে ঘরে
অথবা ঘরের যে কোন স্থানে রাখার ব্যাপারটা
কুরআন ও সুননার বিধান কি?
মাওলানা নেছার কঙ্গো থেকে---
জবাব: ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ ও বারাকাতুহ। বড় পরিতাপ ও আফসোস! আজ মুসলিমদের অনেকে এ ধারণা করে যে, জাহেলিয়াত
যমানায় যে সমস্ত মূর্তি তৈরি করা হত একমাত্র ঐগুলোই হারাম। এতে বর্তমান যামানার
আধুনিক প্লাস্টিক/কাঠের মূর্তি ছবি অর্ন্তভুক্ত নয়। নিম্নে ছবির ভয়াবহার কয়েকটি হাদিস তুলে ধরছি:
হাদিস নং-০১
عَنْ أَبِي طَلْحَةَ ـ رضى الله عنهم ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ (ﷺ)
" لاَ تَدْخُلُ الْمَلاَئِكَةُ بَيْتًا فِيهِ كَلْبٌ وَلاَ تَصَاوِيرُ - رواه
البخارى
আবু তলহা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন,
নবি (ﷺ) বলেছেন, ফিরিশতা ঐ ঘরে প্রবেশ
করে না,
যে ঘরে কুকুর থাকে এবং ঐ ঘরেও না, যে ঘরে ছবি থাকে। বুখারি-৫৯৪৯ কিতাবুল লিবাস; মুসলিম-২১০৬; মিশকাত-৪২৯০
হাদিস নং-০২
«أَنَّهَا اشْتَرَتْ نُمْرُقَةً
فِيهَا تَصَاوِيرُ، فَلَمَّا رَآهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
قَامَ عَلَى البَابِ فَلَمْ يَدْخُلْ، فَعَرَفَتْ فِي وَجْهِهِ الكَرَاهِيَةَ، قَالَتْ:
يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَتُوبُ إِلَى اللَّهِ وَإِلَى رَسُولِهِ، مَاذَا أَذْنَبْتُ؟
قَالَ: «مَا بَالُ هَذِهِ النُّمْرُقَةِ» فَقَالَتْ: اشْتَرَيْتُهَا لِتَقْعُدَ عَلَيْهَا
وَتَوَسَّدَهَا، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: "
إِنَّ أَصْحَابَ هَذِهِ الصُّوَرِ يُعَذَّبُونَ يَوْمَ القِيَامَةِ، وَيُقَالُ لَهُمْ:
أَحْيُوا مَا خَلَقْتُمْ " وَقَالَ: «إِنَّ البَيْتَ الَّذِي فِيهِ الصُّوَرُ
لاَ تَدْخُلُهُ المَلاَئِكَةُ»
“আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা একটি ছোট বালিশ ক্রয় করেছিলেন। তাতে ছবি
আঁকা ছিল। ঘরে প্রবেশের সময় রাসূল (ﷺ)এর দৃষ্টি এতে পতিত হলে তিনি আর ঘরে প্রবেশ করলেন না। আয়েশা
রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা তাঁর মুখমণ্ডল দেখেই তা বুঝতে পারলেন। তিনি বললেন: আমি
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নিকট তাওবা করছি। আমি কি গোনাহ করেছি? রাসূল (ﷺ) জিজ্ঞেস
করলেন: এ ছোট বালিশটি কোথায় পেলে? তিনি বললেন: আমি এটা
এ জন্য খরিদ করেছি যাতে আপনি এতে হেলান দিয়ে বিশ্রাম করতে পারেন। তখন রাসূল (ﷺ) বললেন: যারা এ সমস্ত ছবি অংকন করেছে কিয়ামতের মাঠে তাদেরকে ‘আযাব দেওয়া
হবে। তাদের বলা হবে: তোমরা যাদের সৃষ্টি করেছিলে তাদের জীবিত কর। অতঃপর তিনি
বললেন: যে ঘরে ছবি আছে সে ঘরে ফিরিশতাগণ প্রবেশ করেন না।” বুখারী-৫৯৬১
হাদিস নং-০৩
«أشَدُّ النَّاسِ عَذابًا يَوْمَ
الْقِيَامَةِ الَّذِيْنِ يُضَاهُوْنَ بِخَلْقِ اللهِ».
“কিয়ামতের মাঠে ঐ সমস্ত লোকেরা (যারা ছবি আঁকে তারা আল্লাহর
সৃষ্টির মতোই কিছু করতে উদ্যত হয়।) সবচেয়ে বেশি ‘আযাব ভোগ করবে যারা আল্লাহর
সৃষ্টির মতো সৃষ্টি করে।” বুখারী-৫৯৫৪; সহীহ
মুসলিম-২১০৭।
হাদিস নং-০৪
عَنْهَا عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَشَدُّ
النَّاسِ عَذَابًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ الَّذِينَ يُضَاهُونَ بِخلق الله»
আয়িশা (রা) হতে বর্ণিত। নবী (ﷺ)
বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন সবচেয়ে কঠিন আযাব ভোগ করবে এমন সব লোক যারা আল্লাহর সৃষ্টির
সাথে সাদৃশ্যতা করে। তাখরিজ: বুখারী ৫৯৫৪, ৬১০৯; মুসলিম (২১০৭)-৯১, নাসায়ী ৫৩৫৬, সহীহুল
জামি২২০৪, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ৩০৫৩, মুসান্নাফ ‘আবদুর রায্যাক ১৯৪৮৪, মুসান্নাফ ইবনু আবূ শায়বাহ্ ২৫২০
হাদিস নং-০৫
«أنَّ النَّبيَّ صلي الله عليه
وسلم لَمَّا رأي الصُّوَرَ في البيتِ لَمْ يَدْخُلْ حتّي مُحِيَتْ».
“রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কোনো ঘরে ছবি
দেখলে,
তা সরিয়ে না ফেলা পর্যন্ত ঐ ঘরে প্রবেশ করতেন
না।” বুখারী-৩৩৫২
হাদিস নং-০৬
«نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الصُّورَةِ فِي البَيْتِ، وَنَهَى عَنْ أَنْ يُصْنَعَ
ذَلِكَ»
“রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বাড়ীতে ছবি
ঝুলাতে নিষেধ করেছেন আর অন্যদের তা আঁকতে কিংবা তোলতে নিষেধ করেছেন।” তিরমিযী-১৭৪৯
হাদিস নং-০৭
وَعَن ابنِ عبَّاسٍ عَنْ مَيْمُونَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أصبحَ يَوْمًا واجماً وَقَالَ: «إِنَّ جِبْرِيلَ كَانَ وَعَدَنِي
أَنْ يَلْقَانِيَ اللَّيْلَةَ فَلَمْ يَلْقَنِي أَمَ وَاللَّهِ مَا أَخْلَفَنِي» .
ثُمَّ وَقَعَ فِي نَفْسِهِ جِرْوُ كَلْبٍ تَحْتَ فُسْطَاطٍ لَهُ فَأَمَرَ بِهِ فَأُخْرِجَ
ثُمَّ أَخَذَ بيدِه مَاء فنضحَ مَكَانَهُ فَلَمَّا أَمْسَى لقِيه جِبْرِيلَ فَقَالَ:
«لَقَدْ كُنْتَ وَعَدْتَنِي أَنْ تَلْقَانِي الْبَارِحَةَ» . قَالَ: أَجَلْ وَلَكِنَّا
لَا نَدْخُلُ بَيْتًا فِيهِ كَلْبٌ وَلَا صُورَةٌ فَأَصْبَحَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى
اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَئِذٍ فَأَمَرَ بِقَتْلِ الْكلاب حَتَّى إِنه يَأْمر
بقتل الْكَلْب الْحَائِطِ الصَّغِيرِ وَيَتْرُكُ كَلْبَ الْحَائِطِ الْكَبِيرِ. رَوَاهُ
مُسلم
’আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা.) মায়মূনাহ্ (রা.) হতে বর্ণনা
করেন। একদিন রসূলুল্লাহ (ﷺ) চিন্তিত অবস্থায় ভোর করলেন এবং
বললেনঃ জিবরীল (আ.) এ রাত্রে আমার সাথে সাক্ষাৎ করবেন বলে ওয়া’দা করেছিলেন, কিন্তু সাক্ষাৎ করেননি। আল্লাহর কসম! তিনি তো কখনো আমার
সাথে কথা দিয়ে খেলাফ করেননি। অতঃপর তাঁর মনে পড়ল ঐ কুকুর ছানাটির কথা, যা তাঁর তাঁবুর নিচে ছিল। তখনই তিনি তাকে ঐখান থেকে বের করে
দেয়ার নির্দেশ দিলেন। এরপর তাকে বের করে দেয়া হলো। অতঃপর কুকুরটি যে জায়গায় বসা
ছিল,
তিনি সে জায়গায় কিছু পানি নিজ হাতে নিয়ে ছিটিয়ে
দিলেন। পরে যখন বিকাল হলো জিবরীল (আ.) তার সাথে সাক্ষাৎ করলেন। তখন তিনি (ﷺ)
বললেনঃ গত রাত্রে আপনি আমার সাথে সাক্ষাৎ করার ওয়া’দা করেছিলেন। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, কিন্তু আমরা এমন ঘরে প্রবেশ করি না যে ঘরে কুকুর বা ছবি
থাকে। পরের দিন সকালে রসূলুল্লাহ (ﷺ) সমস্ত কুকুর
মেরে ফেলার জন্য নির্দেশ দিলেন। এমনকি ছোট ছোট বাগানের কুকুরগুলোকেও মারার হুকুম
দিলেন তবে বড় বড় বাগানের কুকুরগুলোকে ছেড়ে দেন। তাখরিজ: সহীহ : মুসলিম-২১০৫ সহীহ
ইবনু হিব্বান ৫৬৪৯, আবূ দাঊদ ৪১৫৭, আস্ সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৪৪১৮, আল মুজামুল
কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ১৯৪৭৭, নাসায়ী ৪২৭৬, ইবনু মাজাহ ৩৬৫১, সহীহ আত্
তারগীব ওয়াত্ তারহীব ৩১০৩, আহমাদ ২৬৮০০, মুসনাদে আবূ ইয়ালা ৭০৯৩
আসার নং-০১
باب الصلاة في البيعة
وقال عمر رضي الله عنه: «إنا لا ندخلكنائسكم من أجل التماثيل التي فيها
الصور» وكان ابن عباس: «يصلي في البيعة إلا بيعةفيها تماثيل»
'হযরত উমর (রা.)বর্ণনা করেন যে,তিনি খ্রিস্টানদের উদ্দেশ্য করে বলেছেন: 'আমি তোমাদের উপাশনালয়ে ওইসব প্রতিমার কারণে প্রবেশ করি না,যা প্রকৃত অর্থে ফটো।
ইবনে আব্বাস (রা.)বিধর্মীদের উপাশনালয়ে
ও নামায পড়তেন,তবে যেখানে ফটো থাকত সেখানে পড়তেন না' সহীহ বুখারী-৪৩৪
আসার নং-২
عن أسلم : " أن عمر حين قدم الشام صنع له رجل من النصارى طعاما وقال
لعمر : إني أحب أن تجيئني وتكرمني أنت وأصحابك - وهو رجل من عظماء النصارى - فقال عمر
: " إنا لا ندخل كنائسكم من أجل الصور التي فيها يعني التماثيل " صححه الألباني
في "آداب الزفاف" (ص)92
হযরত উমর (রা.)যখন সিরিয়া আগমন
করেন,
তখন খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি তাঁর
জন্য খাবার প্রস্তুত করেন। লোকটি খ্রিস্টান সম্পদায়ের অভিজাত শ্রেণীর ছিলেন। লোকটি
হযরত
উমর (রা.)এর কাছে আরজ করলেন, আমার আশা হল, আপনি আমার
এখানে তাশরীফ এনে কৃতার্থ করবেন।হযরত উমর (রা.) লোকটির উদ্দেশ্যে বললেন, আমি তোমাদের উপাশনালয়ে ওইসব প্রতিমা অর্থাৎ ফটোর কারণে
প্রবেশ করি না, যেগুলো সেখানে স্থাপিত আছে।
মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক-1611
আসার-০৩
عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، أَنَّ عَلِيًّا
قَالَ لِأَبِي الهَيَّاجِ الأَسَدِيِّ: أَبْعَثُكَ عَلَى مَا بَعَثَنِي بِهِ النَّبِيُّ
صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ «أَنْ لَا تَدَعَ قَبْرًا مُشْرِفًا إِلَّا سَوَّيْتَهُ،
وَلَا تِمْثَالًا إِلَّا طَمَسْتَهُ
হযরত আলী (রা.) আবুল হাইয়্যাজ আসাদী (রা.) কে (কোথাও)প্রেরণের সময় তাঁর
উদ্দেশ্যে বলেন, আমি কি তোমাকে এমন কাজের প্রতি উৎসাহিত করব না, যে কাজের প্রতি রাসূলে কারীম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে উৎসাহিত করেছেন? আর তা হল কোনো ফটো না মিটিয়ে তা হাতছাড়া করবে না। ' তিরমিযী-১০৪৯, আবু-দাউদ-৩২২৮
আসারনং-০৪.
وَرَأَى أَبُو مَسْعُودٍ، صُورَةً فِي البَيْتِ فَرَجَعَ
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ ( রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি কোনো ঘরে ফটো দেখতে পেয়ে ফেরত চলে আসলেন। '(ঘরের ভেতরে তিনি প্রবেশ করেন নাই।) সহীহ বুখারী শরীফ-৭/২৫
উপরোক্ত হাদিস ও
আসারগুলোর সারংশ:
(ক) উপরোল্লিখিত হাদীস এবং সাহাবায়ে কিরাম ও
তাবেয়ীনদের বর্ণনার কারণে জুমহুর ফুকহায়ে কিরাম ফটো বানানো এবং তা ঘরে টানানো
হারাম হিসাবে অাখ্যায়িত করেছন। সেইসব ছবি ভাস্কর্য তা চিএের আকৃতিতে হোক কিংবা
ভাস্কর্যহীন বা চিএহীন যে কোনো আকৃতিতেই হোক না কেন। মুসলিম শরীফের প্রসিদ্ধ
ব্যাখ্যাকার আল্লামা নববী ( রহ.) ১নং হাদীসেরর ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেছেন :
قال أصحابنا وغيرهم من العلماء تصوير صورة الحيوان حرام شديد التحريم
----------------ومالاظل له هذا تلخيص مذهبنا في المسألة وبمعناه قال جماهير العلماء
من الصحابة والتابعين ومن بعدهم وهو مذهب الثوري ومالك وأبي حنيفة وغيرهم
আমাদের সাথীবর্গ এবং অন্যান্য
উলামায়ে কিরামের অভিমত হল যে,প্রাণীর ফটো বানানো
চূড়ান্ত পর্যায়ের একটি কঠিন হারাম কাজ। এটি গুনাহের কবীরার অন্তুর্ভুুক্ত।-----------।
আল্লামা আইনী ( রহ.) ' উমদাতুল কারী' গ্রন্থে
এজাতীয় অভিমতের কথাই উল্লেখ করেছেন।দেখুন উমদাতুল কারী; খণ্ড-১০, পৃষ্ঠা-৩০৯
(খ) আমাদের প্রিয় নবি (ﷺ) ছবি, মূর্তি ভেঙ্গেছেন আর আমরা তা সংরক্ষণ করছি।
(গ) ৭ নং হাদিস সর্বশ্রেষ্ঠ নবির সাথে সর্বশ্রেষ্ঠ ফেরেশতার ওয়াদা কখনও খেলাফ হবার
কথা নয়,
কিন্তু কুকুর বা ছবির কারণে ওয়াদা রক্ষা হয়নি।
(ঘ) ১ নং ও ৭ নং হাদিস দ্বারা জানা গেল ছবি/মূতি থাকলে রহমতের ফেরেশতারা ঐ ঘরে
প্রবেশ করে না। সুতরাং কোন মুসলিমের প্রাণীর ছবি না রাখা কি রহমতের কাজ, বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখলাম?
(ঙ) ছবির বিরুদ্ধে এত তায়িদ বা হুশিয়ারি আসার
পরও আমাদের অন্তর কাপলো না? لَمۡ یَاۡنِ لِلَّذِیۡنَ
اٰمَنُوۡۤا
اَنۡ
تَخۡشَعَ
قُلُوۡبُهُمۡ
لِذِکۡرِ
اللّٰهِ
وَ
مَا
نَزَلَ
مِنَ
الۡحَقِّ
ۙ অর্থ: যারা মুমিন, তাদের জন্যে
কি আল্লাহর স্মরণে (ভয়ে) এবং যে সত্য অবতীর্ণ হয়েছে, তার কারণে হুদয় বিগলিত/প্রকম্পিত হওয়ার সময় আসেনি? সূরা হাদিদ-১৬
(ছ) বর্তমানের সহিহ হাদিসের উপর আমলের খুব জোরদার দেওয়া হচ্ছে, সহিহ বলতে বলতে মুখে ফেনা উঠছে, তাদের কাছে প্রশ্ন উপরোক্ত সহিহ হাদিসগুলো কি চোখে পড়েনি?
(জ) মুসলিম ভাইদের কাছে আমার অনুরোধ আমরা অনেকে গায়ের জোরে ঢালাওভাবে ছবি তোলা, সংরক্ষণ করা জায়েজ বলছি, কিয়ামতের মাঠে
আল্লাহর কাছে জায়েজ (ধমকমূলক হাদিস জানার পরও) বলার/জবাব দিতে সাহস আছে তো?
হে আমার জাতি! আমি তোমাদের জন্য
বিশ্বস্ত নির্ভরযোগ্য দরদী বন্ধু; কল্যাণকামী।( অতত্রব, বুঝার কিছু
থাকল বুঝ! করার কিছু থাকলে কর,শয়তানের ধোঁকায় পরো না।)
প্রশ্ন: ক। কোন আকা/তোলা/সংরক্ষণ
জায়েজ ?
উত্তর: ক। গাছপালা, চন্দ্র, তারকা, পাহাড় পর্বত, পাথর, সাগর, নদনদী, সুন্দর প্রাকৃতিক
দৃশ্য,
পবিত্র স্থানের ছবি যেমন কাবাঘর মদীনা শরীফ, বাইতুল মোকাদ্দাস, বা অন্যান্য
মসজিদের ছবি ইত্যাদি অর্থাৎ প্রাণহীন বস্তুর ছবি। দলিল:
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.
বলেন,
যদি তোমাকে একান্তই ছবি তৈরি করতে হয়, তাহলে গাছ-গাছড়া এবং
এমন জিনিসের ছবি তৈরি কর যার মধ্যে প্রাণ নেই । বুখারি, মুসলিম, মিশকাত-৪২৯৯
প্রশ্ন: খ। চাকরি, ব্যবসা, হজের জন্য পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয় পত্রের
জন্য ছবি উঠানো যাবে কি ?
উত্তর: খ। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ছবি তোলা জায়েজ নয়। সুতরাং কেউ চাকরি, ব্যবসা, পরিচয় পত্রের জন্য
ছবি উঠানো বাধ্য হলে তার অবকাশ আছে। সূত্র: আল আশবাহ ওয়ান-নাযায়ের-৮৫,কিফায়াতুল মুফতি ৯/২৪৪-২৪৫
বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন-
ফাতাওয়ায়ে মাদানিয়া ২য় খণ্ড; ২০৬-২১৫ পৃষ্ঠা, আল্লামা মাহমুদুল হাসান দা.বা. এর কিতাব, ইসলামের আলোকে ফটোর বিধান মজলিসে এলম, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪, ডিজিটাল ছবি ও ইলেক্ট্রিক মিডিয়া সম্পর্কে ইসলামের বিধান-
মুফতি ইহসানুল্লাহ শায়েক, মাকতাবাতুল আযহার, মোবা.০১৯২৪-০৭৬৩৬৫, ফতোয়ায়ে
উসমানি-মুফতি তকি উসমানি দা.বা.-বইঘর প্রকাশনী-০১৭১১-৭১১৪০৯
প্রশ্ন: গ। ধরুন, আমি কোন ছবিযুক্ত জিনিস কিনেছি এখন
বাঁচার কোন পদ্ধতি আছে কি?
উত্তর: গ। হ্যাঁ, পদ্ধতি হলো, ছবির মাথা যদি কেটে দেয়া হয় তবে তা ব্যবহার করার অনুমতি আছে। কারণ, ছবির মূল হলো মাথা। তাই যদি ছেদ করে দেয়া হয় তবে আর রুহ
থাকল না। তখন তা জড় পদার্থের পর্যায়ে পড়ে। দলিল:
এ সম্বন্ধে জিবরীল আলাইহিস সালাম
রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে বলেন:
«مُر برأسِ التِّمْثَالِ يَقْطَعُ فَيَصِيْرُ عَلي هَيئَةِ الشَّجَرَةِ
وَمُرْ بِالسَّتْرِ فلْيَقْطَعْ فليَجْعَلْ مِنْهُ وِسَادَتَيْنِ تَوطأنِ».
“আপনি মূর্তির মাথা কেটে দিতে বলেন, ফলে উহা গাছের মত কিছু একটাতে পরিবর্তিত হবে। আর পর্দার
কাপড়কে দু’টুকরা করে তা দ্বারা দু’টি বালিশ বানাতে বলেন।” আবূ দাঊদ, হাদীস নং ৪১৫৮
নোট: ছবি বিষয়ে আরও অনেক কথা আছে
আজকে এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ চাহে তো পরে আরও আলোচনা হবে।
পরিশিষ্ট: আপনার প্রশ্নের বর্ণিত ছুরতে কোন জীবের ছবি বা কাঠে খোদাই করে ঘরে অথবা ঘরের যে কোন স্থানে রাখা জায়েজ হবে না। সূত্র: শরহুল উমদাহ:খণ্ড-১,পৃষ্ঠা-১৭৬
والله اعلم بالصواب
(আল্লাহ তাআলাই সকল বিষয়ে সঠিক জ্ঞানের
অধিকারী।)
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله و اصحابه و جميع المؤمن وسلم وتسليما
উত্তর দিচ্ছেন, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক (বগুড়া),
(এম.এ কামিল ফিকাহ ও তাফসির, দাওরায়ে হাদিস, আততাখাস্সুস লিলআদব)
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন