জিজ্ঞাসা-২২২: কুরবানীর গোশতকে তিনভাগ করতে হবে এমন কোনো দলিল আছে?? তারিখ-০৬/০৭/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা সালেহ আহমদ আলীকদম, বান্দরবান থেকে
জবাব: প্রথম কথা হলো, যদি
মান্নতের কুরবানি হয়, কুরবানি দাতা ও ধনী ব্যক্তি/হাশেমি বংশ খেতে পারবে না। সূত্র:
ফাতাওয়া কাসিমিয়া-১৭/৮২-৮৩
দ্বিতীয় কথা হলো, স্বাভাবিক কুরবানি হলে, এর গোশত তিন ভাগ করা(নিজে,আত্মীয়, প্রতিবেশি) মুস্তাহাব বা সর্বোত্তম পদ্ধতি। তিনভাগ করা জরুরি নয়। তবে স্বাভাবিক সময়ে প্রতিবেশি ও আত্মীয়দের হক আছে, সেটাও কুরবানির সময় আদায় করা উচিত।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন- ‘অতঃপর তোমরা উহা হতে আহার কর এবং দুঃস্থ, অভাবগ্রস্থকে আহার করাও। সূরা হজ্ব-২৮
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কুরবানির গোশত সম্পর্কে বলেছেন-
«كلوا وأطعموا وادخروا»
‘তোমরা নিজেরা খাও ও অন্যকে আহার করাও এবং সংরক্ষণ কর।’(বোখারি-৫৫৬৯)। ‘আহার করাও’ বাক্য দ্বারা অভাবগ্রস্থকে দান করা ও ধনীদের উপহার হিসেবে দেয়াকে বুঝায়।
আলকামা বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. আমার হাতে কুরবানীর পশু পাঠান এবং নির্দেশ দেন, কুরবানীর দিন একে যবেহ করবে, নিজে খাবে, মিসকীনদেরকে দেবে এবং আমার ভাইয়ের ঘরে পাঠাবো। সূত্র: আস-সুনানুল কুবরা লিল বাইহাকী: ১০২৩৮
আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল ‘আস (রা.) তার ইহুদী প্রতিবেশীকে দিয়ে গোশত বণ্টন শুরু করেছিলেন। বুখারী, আদাবুল মুফরাদ, হাদীস নং ১২৮; সনদ সহীহ
আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রা.) এর
একটি আছার— ‘এটা আল্লাহ পাক হতে অনুগ্রহ; কোরবানির মাংস পুরোটা
নিজেরা খাওয়া যাবে, দরিদ্রদের দান করা যাবে বা পুরোটা উপহার
হিসেবে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীদের বিতরণ
করা যাবে। এছাড়া ইবন মাসঊদ (রা.) কুরবানীর গোশত তিনভাগ করে একভাগ নিজেরা খেতেন,
একভাগ যাকে চাইতেন তাকে খাওয়াতেন এবং একভাগ ফকির-মিসকিনকে দিতেন বলে
উল্লেখ রয়েছে।
নোট: উপরোক্ত আসারটির সূত্র আমি পাইনি।
ইসলামি গবেষণা প্রতিষ্ঠান মারকাযুদ্ দাওয়াহ আল ইসলামিয়ার মাসিক গবেষণাপত্র আল কাউসারে এ বিষয়ে মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া লিখেছেন, ‘মাসআলা: ৪৩. কোরবানির মাংসের এক-তৃতীয়াংশ গরিব-মিসকিনকে এবং এক-তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকে দেওয়া উত্তম। অবশ্য পুরো মাংস যদি নিজে রেখে দেয়, তাতেও কোনও অসুবিধা নেই। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪,আলমগীরী ৫/৩০০’
والله اعلم بالصواب
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন