আগামীকাল জুমুআ দিনের বিশেষ
তিনটি আমল
জুমআর
দিন বিশেষ তিনটি আমল রয়েছে। ‘সূরা কাহাফ’ তেলাওয়াত করা। প্রিয় নবী (ﷺ) এর প্রতি দরুদ প্রেরণ করা। আসর থেকে মাগরিব বিশেষভাবে ইবাদতে কাটানো, বিশেষ করে দুআ-মুনাজাত করা।
সুরা কাহফ তেলাওয়াতের আমল: عن أبي سَعيدٍ الخُدريِّ عنِ النبيِّ صلَّى
اللهُ عليه وسلَّم أنَّه قال: ((مَن قَرَأَ سورةَ الكَهفِ يومَ الجُمُعةِ أضاءَ له
من النورِ ما بَينَ الجُمُعتينِ অর্থ: হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু রাসুলুল্লাহ (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন,
যে ব্যক্তি জুমআর
দিন সূরা কাহাফ পাঠ করবে, তার জন্য এক জুমআ থেকে অপর জুমআ পর্যন্ত নূর হবে। তাখরিজ: হাকেম; বাইহাকি; মিশকাত ২১৭৫
وَعَنْ
أَبِي الدَّرْدَاءِ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ:
"مَنْ حَفِظَ عَشْرَ آيَاتٍ مِنْ أَوَّلِ سُورَةِ الكَهْفِ عُصِمَ مِنَ
الدَّجَّالِ"
অর্থ: হজরত আবু দারদা রা. থেকে বর্ণিত, নবীজি সা. বলেছেন,
যে ব্যক্তি সুরা
কাহাফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্ত করবে সে দাজ্জালের ফেতনা থেকে নিরাপদ থাকবে। তাখরিজ: মুসলিম-৮০৯, আবু দাউদ-৪৩২৩
দরুদ পড়ার আমল:
হাদিস নং-০১
إنَّ أفضَلَ أيَّامِكم يومُ
الجُمُعةِ فيه خُلِق آدَمُ وفيه قُبِض وفيه النَّفخةُ وفيه الصَّعقةُ فأكثِروا
علَيَّ مِن الصَّلاةِ فيه فإنَّ صلاتَكم علَيَّ معروضةٌ قالوا يا رسولَ
اللهِ وكيفَ تُعرَضُ صلاتُنا عليكَ وقد أَرِمْتَ - قال يقولونَ قد بَلِيتَ - قال إنَّ اللهَ حرَّم
على الأرضِ أنْ تأكُلَ
أجسادَ الأنبياءِ
الراوي : أوس بن أبي أوس وقيل أوس بن أوس
والد عمرو | المحدث : الطبراني | المصدر
: المعجم الأوسط
الصفحة أو الرقم : 5/97
হযরত
আউস ইবনে আউস রা. থেকে বর্ণিত, একটি হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই জুমার দিন শ্রেষ্ঠতম দিনগুলোর অন্যতম।
… সুতরাং সেদিন তোমরা আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ
পড়। নিশ্চয় তোমাদের দরুদ আমার কাছে পেশ করা হয়। তাখরিজ:
সুনানে আবু দাউদ,
হাদিস : ১০৪৭;
মুসনাদে আহমদ,
হাদিস : ১৬১৬২;
হাদিস নং-০২
أَكثِروا
الصَّلاةَ عليَّ يومَ الجمعةِ وليلةَ الجمعةِ فمن صلَّى عليَّ صلاةً صلَّى اللَّهُ
عليْهِ عشرًا
الراوي : أنس بن مالك |
المحدث : الذهبي |
المصدر : المهذب في
اختصار السنن | الصفحة أو الرقم
: 3/1181 | خلاصة حكم المحدث
: إسناده صالح | التخريج : أخرجه البيهقي
في ((الكبرى)) (3/ 249)، والقطيعي في ((جزء الألف دينار)) (صـ 217)، والبيهقي في
((فضائل الأوقات)) (صـ 499).
অর্থ: সূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- তোমরা
জুমার রাত ও জুমার দিনে আমার উপর বেশি বেশি দরূদ পাঠ কর। যে ব্যক্তি আমার উপর
একবার দরূদ পাঠ করে আল্লাহ তাআলা তার উপর দশবার রহমত নাযিল করেন। তাখরিজ: আসসুনানুল কুবরা, বায়হাকী ৩/২৪৯; ফাযাইলুল আওকাত, বায়হাকী ২৭৭; আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলাহ, ইবনুস সুন্নী ৩৭৯, এর সনদ হাসান পর্যায়ের
হাদিস নং-০৩
أَكْثِرُوا
عليَّ مِنَ الصَّلاةِ في يومِ الجمعةِ ؛ فإنَّ صَلاةَ أُمَّتي تُعْرَضُ عليَّ في
كلِّ يومِ جُمُعَةٍ ، فمَنْ كان أكثرَهُمْ عليَّ صَلاةً ؛ كان أَقْرَبَهُمْ مِنِّي
مَنْزِلَةً .
الراوي : أبو
أمامة الباهلي | المصدر : صحيح
الترغيب | الصفحة
أو الرقم : 1673 | خلاصة حكم المحدث : حسن لغيره | التخريج : أخرجه البيهقي في ((الكبرى)) (3/ 249)، وفي ((شعب الإيمان))
(3/ 110)
অর্থ: হজরত আবু উমামা বাহিলি (রা.) ‘প্রত্যেক জুমার দিনে তোমরা আমার ওপর অধিক
পরিমাণে দরুদ পাঠ কর। কারণ আমার উম্মতের দরুদ প্রতি জুমার দিন আমার কাছে পেশ করা হয়।
আর তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি আমার ওপর সবচে বেশি দরুদ পাঠ করে,
সে অন্যদের তুলায়
আমার বেশি নিকটবর্তী হয়। সুনানে বায়হাকী ৩/২৪৯
আসর থেকে মাগরিব বিশেষভাবে ইবাদতে কাটানো:
হাদিস নং-০১
إنَّ في
الجُمُعَةِ لَساعَةً، لا يُوافِقُها مُسْلِمٌ، يَسْأَلُ اللَّهَ فيها خَيْرًا،
إلَّا أعْطاهُ إيَّاهُ، قالَ: وهي ساعَةٌ خَفِيفَةٌ. وفي رواية: ولَمْ يَقُلْ: وهي
ساعَةٌ خَفِيفَةٌ.
الراوي :
أبو هريرة | المحدث : مسلم | المصدر : صحيح مسلم | الصفحة أو الرقم : 852 | خلاصة
حكم المحدث : [صحيح]
অর্থ: রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, জুমার দিনের বারো ঘণ্টার মধ্যে একটি বিশেষ
মুহূর্ত এমন আছে যে, তখন কোনো মুসলমান আল্লাহর নিকট যে দোয়া
করবে আল্লাহ তা কবুল করেন। মুসলিম-৮৫২; আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৮
হাদিস নং-০২
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم
أَنَّهُ قَالَ " الْتَمِسُوا السَّاعَةَ الَّتِي تُرْجَى فِي يَوْمِ
الْجُمُعَةِ بَعْدَ الْعَصْرِ إِلَى غَيْبُوبَةِ الشَّمْسِ " . قَالَ
أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ
আবদুল্লাহ
ইবনুল সাববাহ আল-হাশিমী আল-আত্তার (রহঃ) ..... আনাস ইবনু মালিক রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, জুমাবারের
যে মুহূর্তটিতে দুআ কবূলের আশা করা যায়, তোমার সে
মুহূর্তটিকে বাদ আসর সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়টিতে তালাশ কর। - মিশকাত ১৩৬০, তালীকুর রাগীব ১/২৫১, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৪৮৯
নোট: ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী (রহঃ) বলেনঃ এই সনদে হাদীসটি গারীব। সাহাবী এবং
পরবর্তী যুগের কতিপয় আলিমের অভিমত হল, এই দুআ করার মুহূর্তটি
বাদ আসর থেকে সূর্যন্ত সময় আশা করা যায়। ইমাম আহমদ ও ইসহাক (রহঃ)-এর অভিমত এ-ই।
ইমাম আহমদ (রহঃ) বলেনঃ দুআ করার মুহূর্তটি সম্পর্কে অধিকাংশ হাদীসই বাদ আসর থেকে
সূর্যস্ত পর্যন্ত সময়ের কথা উল্লেখিত হয়েছে। তবে যাওয়াল বা সূর্য পশ্চিমদিকে হেলে
পড়ার পর থেকেও তা আশা করা যায়।
হাদিস/আসার
নং-০৩
আব্দুল্লাহ
ইবনে সালাম রা. বর্ণনা করেন, শুক্রবারে আসরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া কবুল হয়। বিখ্যাত
সিরাতগ্রন্থ যাদুল মাআ’দ-এ বর্ণিত আছে, জুমার দিন আসরের নামাজ আদায়ের পর দোয়া কবুল
হয়। (২/৩৯৪)। ইমাম আহমদ (রহ.) ও একই কথা বলেছেন। (তিরমিজির ২য় খণ্ডের ৩৬০ নং পৃষ্ঠায়
কথাটি উল্লেখ আছে)
আল্লাহ
তাআলা আমাদের জুমুআর দিন এই আমল তিনটি করার তাওফিক দান করেন। আমিন।
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন