জিজ্ঞাসা-১২৩২১
সম্মানিত মুফতি সাহেব। আমার
জানার বিষয় হলো, ইদানিং স্কুল কলেজের ছাত্র
ছাত্রীদের জন্য হাফ ভাড়ার বিধান চালু করা হয়েছে, বিভিন্ন সময় এ দাবিতে আন্দোলন করে। তা কি ইসলামি শরীয়ত সম্মত?
দলীলসহ জানালে খুব উপকৃত হতাম।
তারিখ: ২৯/১০/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুর রহমান সাভার থেকে-----
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
نحمده ونصل على رسوله الكريم
اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো, অন্যের সম্পদের হস্তক্ষেপ করার ক্ষেত্রে শরিয়তের
মূলনীতি হলো, সন্তুষ্টচিত্তে হতে হবে। সন্তুষ্টি ব্যতিত কারও
এক পয়সাও টাকা হরণ/গ্রহণ জায়েজ নেই, হারাম। দলিল:
আয়াত নং-০১
وَآتُوا النِّسَاءَ
صَدُقَاتِهِنَّ نِحْلَةً فَإِن طِبْنَ لَكُمْ عَن شَيْءٍ مِّنْهُ نَفْسًا
فَكُلُوهُ هَنِيئًا مَّرِيئًا
আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের
মোহর দিয়ে দাও খুশীমনে। তারা যদি খুশী হয়ে তা থেকে অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ
কর। সূরা নিসা-০৪
আয়াত নং-০২
وَلَا تَأْكُلُوا أَمْوَالَكُم
بَيْنَكُم بِالْبَاطِلِ [٢:١٨٨
অর্থ: তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না। সূরা বাকারা-১৮৮
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ اِلَّاۤ اَنۡ تَکُوۡنَ تِجَارَۃً عَنۡ تَرَاضٍ مِّنۡکُمۡ ۟
অর্থাৎ হে মুমিনগণ! তোমরা
পরস্পরে একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না, তবে
পারস্পরিক সন্তুষ্টিক্রমে কোন ব্যবসায় করা হলে (তা জায়েয)। সূরা
নিসা-২৯
হাদিস নং-০১
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ,
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «لَا يَحِلُّ مَالُ
امْرِئٍ مُسْلِمٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسِهِ»
হজরত আনাস বিন মালেক রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, কোন
মুসলমানের সম্পদকে তার সন্তুষ্টি ছাড়া গ্রহণ করা হালাল নয়। তাখরিজ: সুনানে দারা কুতনি-২৮৮৫
উপরোক্ত তিনটি আয়াতে কারিমা ও একটি হাদিসে নববির ইশারাতুন নস দ্বারা প্রমাণ করে যে, জোর কোন হক খর্ব করা যায় না এবং খুশিমনে কেহ তার হক ছেড়ে দিলে কেবল সেটাই বৈধ হবে।
ফোকাহায়ে কেরামের সিদ্ধান্ত: ইমাম ইবনে আবেদিন শামি (রহ.) বলেন,
لا يجوز التصرف فى مال غيره بلا إذنه ولا ولايته (الدر المختار مع رد المحتار-9\291)
অর্থাৎ অন্যের সম্পদ তার অনুমতির ব্যতিত জায়েজ নেই। সূত্র: দুররুর মুখতার-৯ খণ্ড, ২৯১ পৃ.
সারকথা হলো, আপনার প্রশ্নের আলোকে যদি কোন ছাত্র গাড়িতে উঠে আর সেই পরিবহনের মালিক স্বেচ্ছায় শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়া গ্রহণ করে থাকে, তাহলে হাফ ভাড়া দিয়ে ছাত্রদের যাতায়াত জায়েজ আছে।
কিন্তু পরিবহন মালিকদের বাধ্য
করে তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করে হাফ ভাড়া প্রদান করা জায়েজ নেই। এতে হক্কুল ইবাদ নষ্ট করার শামিল।
والله اعلم بالصواب
উত্তর প্রদানে, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন