জিজ্ঞাসা-১২৫৩৩:
আসসালামু আলাইকুম।
ভাড়া নেওয়া বা ব্যবসার উদ্দেশ্যে বিল্ডিং বা সম্প্রসারণের জন্য অনুরোধ জানানোর জন্য যাকাতের সময় ঋণ ধর্তব্য করতে হবে না। -মুসান্নাফে আবদুর রাজাযাক ৭০৮৭
এই হাদীসের অনুবাদ সঠিক করে লিখলে ভালো হয়। ধন্যবাদ।
তারিখ: ১০/০৪/২৩ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা রবিউল হক ঢাকা থেকে।
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
نحمده ونصل على رسوله الكريم اما بعد بسم الله الرحمن الرحيم
তাসলিম ও হামদ-সানার পর প্রথম কথা হলো,
[٧٣٥٥] عبد الرزاق، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ حَمَّادٍ، قَالَ: الزَّكَاةُ عَلَى مَنِ الْمَالُ فِي يَدِهِ، قَالَ: وَكَانَ ابْنُ الْمُسَيَّبِ يَقُولُ: إِذَا كَانَ الدَّيْنُ وَالسَّلَفُ عَلَى مَلِيءٍ( أي غَنِيٍّ) فَعَلَى سَيِّدِهِ أَدَاءُ زَكَاتِهِ، فَإِنْ كَانَ عَلَى مُعْدِمٍ فَلَا زَكَاةَ فِيهِ.
অর্থাৎ যার স্বত্বাধিকারে নিসাব পরিমাণ সম্পদ বিদ্যমান রয়েছে, তার উপরই যাকাত আবশ্যক হবে। সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিব বলেন, ঋণগ্রহণকারী ব্যক্তি যদি প্রাচুর্যশালী, বিত্তবান ও ধনকুবের হয়ে থাকে, তাহলে তার কর্জকৃত অর্থের উপর যথাযথ নিয়মে যাকাত আবশ্যক হবে। পক্ষান্তরে ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি যদি নিঃস্ব, কপর্দকহীন ও সহায়-সম্বলহীন হয়ে থাকে, তাহলে তার গৃহিত ঋণের উপর যাকাত আসবেনা। (মুসন্নাফ আব্দুর রাজ্জাক-৭৩৫৫)
ব্যাখ্যা: উপর্যুক্ত আছার একথারই প্রমাণ বহন করে যে, কোন শিল্পপতি/ বিজনেস ম্যাগনেট/ ধনাঢ্য ব্যক্তি যদি শিল্প কলকারখানা নির্মাণ, বানিজ্যিক বিনিয়োগ সম্প্রসারণ প্রভৃতির উদ্দেশ্যে ঋণ গ্রহণ করে, তাহলে তার কর্জকৃত অর্থের উপরও যাকাত আবশ্যক হবে। কারণ কর্জকৃত অর্থগুলো তার নিজস্ব মালিকানাধীন। আর নিতান্ত অভাবগ্রস্ত হয়ে মৌলিক প্রয়োজন নিবারণের উদ্দেশ্যেও সে দেনা করেনি। বরং তার উন্নত জীবনযাত্রার মানকে আরো বেশী উন্নততর করার জন্য সে ধার গ্রহণ করেছে। সুতরাং তার এজাতীয় ঋণগ্রহণ যাকাত অবধারিত হওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হতে পারেনা। বরং স্বাভাবিক নিয়মে যাকাত আবশ্যক হওয়াকেই সমর্থন করে।
উল্লেখ্য যে, সাধারণ মানুষ/আলেম হাদিসের সাধারণ অর্থ বুঝে আর ফুকাহায়ে উম্মত হাদিসটির গভীর অর্থ উপলদ্ধি করে মাসয়ালা ইস্তেমবাত করেন।
যেমন বিখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম তিরমিজি (রহ.) বলেন, الفقهاء و هم اعلم يعني الحديث অর্থাৎ ফুকাহায়ে কেরাম হাদিসের অর্থ বিষয়ে অধিক জ্ঞাত। সূত্রঃ জামে তিরমিজি-৩/৩১৫পৃ.
و نقل ابن حبان في كتاب الثقات له: قال الإمام الأعمش المفسر المحدث لأبى حنيفة : يا نعمان ما تقول في كذا كذا قال كذا وكذا قال من أين قلت قال أنت حدثتنا عن فلان بكذا قال الأعمش أنتم يا معشر الفقهاء الأطباء ونحن الصيادلة. ( كتاب الثقات; ج/ ٨، ص /٤٦٧)
অর্থাৎ বিশিষ্ট মুফাসসির, বরেণ্য হাদীসবেত্তা, প্রখ্যাত তাবেয়ী ইমাম আ'মাশ একবার হানাফী মাযহাব প্রণেতা ইমাম আবু হানিফার প্রজ্ঞানির্ভর বুদ্ধিদীপ্ত মাসআলাগত সমাধান দেখে বিমুগ্ধচিত্তে তাঁকে সম্বোধন করে বলেন, " হে ফিকহশাস্ত্র বিশারদগন! একজন রোগীর কাছে আপনারা হলেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সমতুল্য। আর আমাদের অবস্থান হলো, ফার্মেসীর নিছক ঔষধ বিক্রেতার মতো।" ( কিতাবুস সিকাত; ইবনে হিব্বান- খন্ড নং ঃ ৮, পৃষ্ঠা নং ঃ ৪৬৭)
সারকথা হলো, এ বিষয়ে আরও জানার জন্য দারুল ইফতা যোগাযোগ করার অবকাশ রয়েছে।
والله اعلم بالصواب
উত্তর প্রদানে, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন