জিজ্ঞাসা-২৩১: শুধু ঈদ মোবারক বলা
কি জায়েজ না বিদআত? তারিখ-০৯/০৭/২২ ঈসায়ি/ইংরেজি
মাওলানা মুহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম বগুড়া থেকে---
জবাব: ঈদ মুবারক অর্থ ঈদ আপনার জন্য
কল্যাণকর হোক ঈদ আপনার কল্যাণ বয়ে আনুক ইত্যাদি। এরকম দোয়া এক মুসলিম আরেক মুসলিমের জন্য করতে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু এটিকে সুন্নত বা মুস্তাহাব মনে করে বললে বিদআত হবে।
তবে তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না
ওয়ামিনকুম বলাটাই যেহেতু প্রমাণিত। তাই এ বাক্যটিই বলা উচিত।
দলিল:
عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ قَالَ: لَقِيتُ وَاثِلَةَ بْنَ
الْأَسْقَعِ فِي يَوْمِ عِيدٍ , فَقُلْتُ: تَقَبَّلَ اللهُ مِنَّا وَمِنْكَ ,
فَقَالَ: ” نَعَمْ، تَقَبَّلَ اللهُ مِنَّا وَمِنْكَ ” , قَالَ وَاثِلَةُ: ”
لَقِيتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ عِيدٍ فَقُلْتُ:
تَقَبَّلَ اللهُ مِنَّا وَمِنْكَ , قَالَ: ” نَعَمْ , تَقَبَّلَ اللهُ مِنَّا
وَمِنْكَ “
হযরত খালিদ বিন মা’দান থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ওয়াছিলা বিন আসক্বাহ রাঃ এর সাথে ঈদের দিন
সাক্ষাৎ করলাম। তখন আমি তাকে বললামঃ তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা। তখন তিনি
বললেনঃ হ্যাঁ, তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়ামিনকা। ওয়াছিলা আরো
বললেনঃ আমি একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ঈদের দিন সাক্ষাৎ
করেছিলাম। যততখন বলেছিলামঃ তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়ামিনকা। তখন তিনিও বলেছিলেনঃ
হ্যাঁ,
তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়ামিনকা। তাখরিজ: সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী-৬২৯৪,মাযমাউয যাওয়ায়েদ, হাদীস-৩২৫৫
জুবাইর ইবনু নুফাইর (রা.) বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘নবীজি (সা.)-এর সাহাবোয়ে কেরাম ঈদের দিন পরস্পর সাক্ষাৎ হলে
বলতেন ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়ামিন কুম’ আল্লাহ আমার এবং আপনার যাবতীয় ভালো কাজ কবুল
করুক। সূত্র:ফাতহুল কাদির, খণ্ড : ০২, পৃষ্ঠা : ৫১৭
শাইখ আল-ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ কে এ জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল: ঈদের অভিনন্দন এবং লোকেরা কী বলে: "তোমার ঈদ বরকতময়" এবং এর মতো ইসলামে কোন ভিত্তি আছে?? আর শরীয়তে এর উৎপত্তি থাকলে কি বলা হয়?
জবাবে তিনি বলেন,
أَمَّا التَّهْنِئَةُ يَوْمَ الْعِيدِ يَقُولُ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ إذَا لَقِيَهُ بَعْدَ صَلاةِ الْعِيدِ : تَقَبَّلَ اللَّهُ مِنَّا وَمِنْكُمْ , وَأَحَالَهُ اللَّهُ عَلَيْك , وَنَحْوُ ذَلِكَ , فَهَذَا قَدْ رُوِيَ عَنْ طَائِفَةٍ مِنْ الصَّحَابَةِ أَنَّهُمْ كَانُوا يَفْعَلُونَهُ وَرَخَّصَ فِيهِ , الأَئِمَّةُ , كَأَحْمَدَ وَغَيْرِهِ . لَكِنْ قَالَ أَحْمَدُ : أَنَا لا أَبْتَدِئُ أَحَدًا , فَإِنْ ابْتَدَأَنِي أَحَدٌ أَجَبْته , وَذَلِكَ لأَنَّ جَوَابَ التَّحِيَّةِ وَاجِبٌ , وَأَمَّا الابْتِدَاءُ بِالتَّهْنِئَةِ فَلَيْسَ سُنَّةً مَأْمُورًا بِهَا , وَلا هُوَ أَيْضًا مَا نُهِيَ عَنْهُ , فَمَنْ فَعَلَهُ فَلَهُ قُدْوَةٌ , وَمَنْ تَرَكَهُ فَلَهُ قُدْوَةٌ . وَاَللَّهُ أَعْلَمُ" اهـ .
অর্থাৎ ঈদের দিন অভিনন্দন জানানোর বিষয়ে, তারা ঈদের সালাতের পর তার সাথে দেখা হলে একে অপরকে বলে: আল্লাহ আমাদের এবং আপনার কাছ থেকে কবুল করুন এবং আল্লাহ তা আপনাকে দান করুন। একদল সাহাবী যা করতেন এবং ইমামগণ যেমন আহমদ ও অন্যান্যরা এর অনুমতি দিয়েছেন।আমি কাউকে দীক্ষা দেই, আর কেউ আমাকে দীক্ষা দিলে আমি তাকে সাড়া দেই, কারণ সালামের জবাব দেওয়া ওয়াজিব। না, এটাও যা নিষিদ্ধ ছিল, তাই যে এটা করে তার একটা উদাহরণ আছে, আর যে এটা ত্যাগ করে তার একটা উদাহরণ আছে। সূত্র: আল-ফাতাওয়া আল-কুবরা (2/228)
এ বিষয়ে শায়েখ উসাইমিন রহ. কে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি জবাবে বলেন,
التهنئة بالعيد جائزة ، وليس لها تهنئة مخصوصة ، بل ما اعتاده الناس فهو جائز ما لم يكن إثماً" اهـ .
অর্থাৎ ঈদের অভিনন্দন জায়েজ, এবং এর জন্য কোন নির্দিষ্ট অভিনন্দন নেই, বরং লোকেরা যা অভ্যস্ত তা জায়েজ যতক্ষণ না তা গুনাহ না হয়। সূত্র: মাজমু' ফাতাওয়া ইবনে উসাইমীন (16/208-210)
সুতরাং স্বাভাবিক দৃষ্টিতে ঈদ মোবারক বলতে কোন সমস্যা নেই, বরং ঈদের দিনে
মুমিনের খুশি প্রকাশ করা উচিত। সূত্র: আহসানুল ফতোয়া,১/৩৮৪;ফতোয়ায়ে
রহিমিয়া-১/২৮১
الله اعلم بالصواب
উত্তর দিচ্ছেন, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন