প্রশ্ন-১৬৮: আসসালামু আলাইকুম, হজরত অজুতে মাথা মাসেহ করার
সাথে কান ও ঘাড় মাসেহ করার বিধান দলীল সহ জানতে চাই।
মাওলানা সাইফুল ইসলাম, ত্রিশাল, মোমেনশাহী
থেকে---
উত্তর: ওয়ালাইকুমুস সালাম
ওয়া রহমাতুল্লাহ ও বারাকাতুহ। আল্লাহ তাআলা আপনাকে নিরাপদে ও শান্তিতে রাখুন। তাসলিমবাদ
কথা হলো, এ বিষয়ে আইম্মায়ে মুজতাহিদগণের মতভেদ রয়েছে।
প্রশ্ন: ক। কান মাসেহ করা বিধান।
উত্তর: ক। প্রথম কথা হলো, আমাদের কিছু ভাই কোন দালায়িল
যদি বুখারি ও মুসলিমে না থাকে, তখন ঐ হাদিস বা দলীল
মানতে চান না। তাদের কাছে প্রশ্ন, বুখারি-মুসলিমের হাদিসে যে সহিহ/এটাই মানতে হবে এ বিষয়ে কোন নস আছে কি? একমাত্র সহিহ
হাদিসই শরিয়তের দলীল, এ বিষয়ে কোন নস আছে কি? (তাদেরকে কিয়ামত পর্যন্ত সময় দেওয়া হলো)
দ্বিতীয় কথা হলো, অযুতে কান মাসেহ
করা সুন্নত। মাথা মাসেহর পর ভেজা হাত দিয়ে কান মাসেহ করে নিবে। এজন্য নতুন পানি
নিবে না।
হাদিস নং-০১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ
أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِدْرِيسَ، عَنِ ابْنِ عَجْلاَنَ،
عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ،
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ مَسَحَ أُذُنَيْهِ دَاخِلَهُمَا
بِالسَّبَّابَتَيْنِ وَخَالَفَ إِبْهَامَيْهِ إِلَى ظَاهِرِ أُذُنَيْهِ فَمَسَحَ
ظَاهِرَهُمَا وَبَاطِنَهُمَا .
অর্থ: বকর ইবন আবু শায়বা (র)..........ইবন 'আব্বাস
(রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর উভয় কান মাসেহ করেন। তিনি তাঁর শাহাদাত আঙ্গুলীদ্বয় দুই কানের
ছিদ্রপথে প্রবেশ করান এবং তাঁর বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় কানের বাইরের অংশে রাখেন। এভাবে তিনি
দুই কানের ভেতর ও বাহির উভয় অংশ মাসেহ করেন। তাখরিজ: সুনানে ইবনে মাজাহ-৪৩৯
তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক হাসান)
হাদিস নং-০২
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ
أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا شَرِيكٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ
بْنِ عَقِيلٍ، عَنِ الرُّبَيِّعِ، أَنَّ النَّبِيَّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ
تَوَضَّأَ فَمَسَحَ ظَاهِرَ أُذُنَيْهِ وَبَاطِنَهُمَا .
অর্থ: আবূ বকর ইবন আবূ শায়বা (র) …... রবী' (রা)
থেকে বর্ণিত। নবী (ﷺ) উযূ
করেন এবং তিনি তাঁর উভয় কানের ভেতর ও বাইরের অংশ মাসেহ করেন। তাখরিজ: সুনানে ইবনে মাজাহ-৪৪০
তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক হাসান)
হাদিস নং-০৩
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، حَدَّثَنَا حَرِيزُ بْنُ عُثْمَانَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ مَيْسَرَةَ، عَنِ الْمِقْدَامِ بْنِ مَعْدِيكَرِبَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ تَوَضَّأَ فَمَسَحَ بِرَأْسِهِ وَأُذُنَيْهِ ظَاهِرَهُمَا وَبَاطِنَهُمَا .
হিশাম ইবন 'আম্মার (র)......... মিকদাম ইবন
মা'দি কারিব (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উযূ করেন। এবং তাঁর মাথা মাসেহ করেন, আর তাঁর উভয় কানের ভেতর ও বাইরের
অংশ মাসেহ করেন। তাখরিজ: সুনানে ইবনে মাজাহ-৪৪২
তাহকীক: বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
হাদিস নং-০৪
রুবাইয়ি বিনতে মুয়াওয়িয
রা. থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অযু করতে দেখেছেন।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মাথার সম্মুখ
ভাগ ও পিছন ভাগ এবং মাথার উভয় পার্শ্ব ও কান একবার মাসেহ করেছেন। তাখরিজ: জামে তিরমিযী ১/৭
তাহকীক: ইমাম তিরমিযী রাহ.
হাদীসটিকে হাসানুন সহীহ বলেছেন।
তৃতীয় কথা হলো, শরীয়তের বিধান অনুযায়ী অযুর ভিতর কানের লতির বাহ্যিক অংশের গোড়া পর্যন্ত পানি পৌছানো ফরজ।
সূরা মায়েদার ০৬ নং আয়াতে
যে মুখ মণ্ডল ধোয়ার কথা বলা হয়েছে। মুখমন্ডলের সীমানা হলো, কপালের চুলের গোড়া থেকে থুতনীর নিচ এবং উভয় কানের লতি পর্যন্ত পানি
পৌঁছানো। একবার ধোয়া ফরয, তিন বার ধোয়া সুন্নাত।
সূত্র: ইমদাদুল আহকাম ১/৩৬৬
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا إِذَا قُمْتُمْ إِلَى الصَّلَاةِ فَاغْسِلُوا وُجُوهَكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ إِلَى الْمَرَافِقِ وَامْسَحُوا بِرُءُوسِكُمْ وَأَرْجُلَكُمْ إِلَى الْكَعْبَيْنِ
অর্থ : “হে মুমিনগণ! যখন তোমরা
সালাতের জন্য প্রস্তুত হবে, তখন তোমরা তোমাদের মুখ
মন্ডল ও দুই হাত কনুই সহ ধৌত করবে, এবং তোমাদের মাথা
মাসেহ করবে, আর দুই পা গোড়ালীসহ ধৌত করবে।” সূরা মায়িদা-৬
প্রশ্ন: খ। ঘাড়/গর্দান মাসেহ করার বিধান।
উত্তর: খ। এ
বিষয়ে আইম্মায়ে মুজতাহিদগণের মতভেদ রয়েছে।
لهذا لم يستحب مالك والشافعي
وأحمد في ظاهر مذهبهم ، ومن استحبه فاعتمد فيه على أثر يروى عن أبي هريرة رضي الله
عنه ، أو حديث يضعف نقله : أنه مسح رأسه حتى بلغ القَذَال . ومثل ذلك لا يصلح عمدة
، ولا يعارض ما دلت عليه الأحاديث ، ومن ترك مسح العنق فوضوءه صحيح باتفاق العلماء
" انتهى .
"مجموع الفتاوى" (21/127
ফুকাহায়ে আহনাফের মতে, ওযুতে ঘাড়
মাসাহ করা মুস্তাহাব। বাকি তিন ইমামের মতে মুস্তাহাব নয়। সুতরাং কেউ ওজুতে
ঘাড় মাসেহ ছেড়ে দিলে ওজু সহিহ হবে। সূত্র: মাজমুউল ফাতওয়া-২১/১২৭
ফুকাহায়ে আহনাফের দলীল:
হাদিস নং-০১
عَنِ الْمِقْدَامِ بْنِ مَعْدِيكَرِبَ، قَالَ
رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تَوَضَّأَ فَلَمَّا بَلَغَ مَسْحَ
رَأْسِهِ وَضَعَ كَفَّيْهِ عَلَى مُقَدَّمِ رَأْسِهِ فَأَمَرَّهُمَا حَتَّى بَلَغَ
الْقَفَا ثُمَّ رَدَّهُمَا إِلَى الْمَكَانِ الَّذِي بَدَأَ مِنْهُ
অর্থাৎ মিকদাদ ইবনু
মাদীকারাব রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে উযু করতে দেখেছি। উযু করতে করতে যখন মাথা
মাসেহ্ পর্যন্ত পৌছান, তখন তিনি এভাবে মাথা মাসেহ্ করেন যে, উভয় হাতের
তালু মাথার সামনের অংশে স্থাপন করে তা ক্রমান্বয়ে মাথায় পশ্চাদভাগ ( ঘাড়ের
সংযোগস্থান) পর্যন্ত নেন। অতঃপর তিনি পেছনের দিক হতে সামনের দিকে তা শুরুর স্থানে
ফিরিয়ে আনেন। তাখরিজ: সুনানে আবু দাউদ হাদিস-১২২
নোট:
الحديث : ( أنه صلى الله عليه
وسلم مسح رأسه حتى بلغ الْقَذَالَ ، وَهُوَ أَوَّلُ الْقَفَا ) . رواه أبو داود
(132) وضعفه الألباني في ضعيف أبي داود .
অর্থাৎ আলবানি হাদিসটির সনদকে জয়িফ বলেছেন।
হাদিস নং-০২
عن نافع عن ابن عمر أن النبي صلى الله عليه وسلم قال من توضأ ومسح بيديه على عنقه
وقي الغل يوم القيامة
অর্থ: নাফে হযরত ইবনে উমর
রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল (ﷺ)
ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি অজু করে এবং উভয় হাত দিয়ে গর্দান মাসাহ করে, তাহলে তাকে কিয়ামতের দিন [আযাবের] বেড়ি থেকে বাঁচানো হবে।
সূত্রঃ- নাইলুল আওওতার খ: ১ পৃষ্টা: ২০৬
নোটা:
ইমাম
আবুল হাসান ফারেছ রহ. বলেন-
هَذَا إنْ شَاءَ اللَّهُ حَدِيثٌ
صَحِيحٌ
অর্থাৎ ইনশাআল্লাহ হাদীসটি সহীহ। সূত্রঃ- নাইলুল আওতার ১ম খণ্ড; ২০৬
পৃ.
এবং আলবানি (রহ.) এই হাদিসটিকে মাওজু বলেছেন।
হাদিস নং-০৩
ﻋﻦ ﻣﻮﺳﻰ ﺑﻦ ﻃﻠﺤﺔ ﻗﺎﻝ ﻣﻦ ﻣﺴﺢ ﻗﻔﺎﻩ ﻣﻊ ﺭﺃﺳﻪ ﻭﻗﻲ ﺍﻟﻐﻞ
ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ
অর্থাৎ মুসা ইবনে তালহা থেকে
বর্ণিত, যে
ব্যক্তি মাথার সাথে গর্দানকেও মাসেহ করবে, ক্বিয়ামতের
দিন জান্নামের বেড়ী পড়ানো থেকে তাকে মুক্ত রাখা হবে।
সূত্র: তালখীসুল হাবীর খ:১ পৃ: ১৬২ নাইলুল আওতার খ: ১ পৃষ্টা: ২০৩
তাহকীক: হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী
রহঃ বলেন,
فيحتمل أن يقال هذا وإن كان موقوفا فله حكم الرفع لان هذا لا يقال من قبل الرأي فهو على هذا مرسل
অর্থাৎ বর্ণনাটি সম্পর্কে একথা
বলা যায় যে, যদিও তা মাওকুফ (একজন তাবেয়ীর কথা) হিসেবে পাওয়া
যাচ্ছে, কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে তা মারফুউ (রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর হাদীস) হিসাবে গণ্য হবে। কেননা, তিনি
ছাড়া অন্য কারো পক্ষে এমন সংবাদ দেওয়া সম্ভব নয়। সূত্র:
তালখীসুল হাবীর খ:১ পৃ: ১৬২ নাইলুল আওতার খ: ১ পৃষ্টা:২০৩
হাদিস নং-০৪
عَنْ طَلْحَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَوَضَّأَ فَمَسَحَ رَأْسَهُ هَكَذَا وَأَمَرَّ حَفْصٌ بِيَدَيْهِ عَلَى رَأْسِهِ حَتَّى مَسَحَ قَفَاهُ
অর্থ: হযরত তালহা তিনি তার পিতা, তিনি
তার দাদারসূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন,
আমি
নবীজী (ﷺ)কে দেখেছি, তিনি
অজু করছেন। তখন তিনি এভাবে মাথা মাসাহ করেছেন। উভয় হাতকে জমা করে পাস কাটিয়ে তা দিয়ে
গর্দান মাসাহ করতেন। তাখরিজ: মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা খ: ১ পৃ: ২৯১ হাদীস: ১৫০
হাদিস নং-০৫
عَنْ كَعْبَ بْنَ عَمْرٍو قَالَ
رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَوَضَّأَ فَمَسَحَ بَاطِنَ
لِحْيَتِهِ وَقَفَاهُ
অর্থ: হযরত কা‘ব বিন আমর রা. বলেছেন,
আমি
নবী করীম (ﷺ) কে দেখেছি তিনি
ওযূ করলেন, এরপর তিনি তার দাঁড়ির অভ্যন্তরভাগ এবং ঘাড় মাসাহ
করলেন।
সূত্র: মু’জামে কাবীর (তবরানী) হাদিস: ৪১২
আসার নং-০১
عن مجاهد عَنِ ابْنِ عُمَرَ
أَنَّهُ كَانَ إِذَا مَسَحَ رَأْسَهُ مَسَحَ قَفَاهُ مَعَ رَأْسِهِ
হজরত মুজাহিদ হতে বর্ণিত। হযরত ইবনে
উমর রাঃ যখনি মাথা মাসাহ করতেন, তখন মাথা মাসাহের সাথে গর্দানও মাসাহ করতেন। তাখরিজ: সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী হাদীস নং-২৭৯
গ। একটি প্রশ্ন :
অনেকে ভাইয়েরা বলে, উপরোক্ত
গুলো যেহেতু জয়িফ সুতরাং এর উপর আমল করা যাবে না; বরং
বিদআত।
গ। তার উত্তর:
প্রথম কথা হলো, বিদআত বলা হয়, যে আমল/ইবাদতের
অস্তিত্ত্ব খয়রুল কুরুনে নেই। আমরা ঘাড়
মাসেহ করার ব্যাপরে উপরে একাধিক সহিহ হাদিস এবং একটি আসার উল্লেখ করলাম, তারপরও
বিদআত কিভাবে হয়।
এটা একটি সুপ্রসিদ্ধ মত যে, জয়িফ হাদিস আমল করা
জায়েজ। এসম্পর্কে খোদ আল্লামা নববী রহ. বলেন,
ويجوز عند أهل الحديث وغيرهم التساهل في الأسانيد
ورواية ما سوى الموضوع من الضعيف والعمل به من غير بيان ضعفه في غير صفات الله
تعالى والأحكام
অর্থাৎ হাদীস বিশারদকারীদের
নিকট যঈফ সনদ সমূহে শিথিলতা করা এবং জাল ছাড়া দুর্বল হাদীসের দুর্বলতা উল্লেখ করা
ব্যতীত বর্ণনা করা জায়েয। আর তার উপর আমল করা বৈধ। যখন তা আহকাম এবং আল্লাহ
তায়ালার ছিফাতের ব্যাপারে না হয়। সূত্র: তাদরীবুর রাবী পৃষ্ঠা ৩৫০
শুধু তাই নয় তাদের কিতাবেও
জায়েজ বলে উল্লেখ আছে,
حدیث ضعیف سے جو موضوع نہ ہو استحباب و جواز ثابت
ہوتا ہے
অর্থাৎ যেটা জাল নয় এমন যয়ীফ
হাদিস দ্বারা (যেকোনো আমল) মুস্তাহাব এবং জায়েয প্রমাণ হয়। সূত্র: ফাতাওয়ায়ে
উলামায়ে হাদিস খ: পৃ: ২১৭
সিদ্দিক হাসান খান ভূপালীর অভিমত:
আহলে হাদিস মতবাদের বড় ইমাম ও মূখপাত্র নওয়াব সিদ্দিক হাসান খান ভূপালী রহ. বলেন,
اگر چہ در مسح رقبہ حدیثی کہ موصوف بصحت یا حسن بود نیامدہ مگر ابن حجر در تلخیص احادیث غیر بالغ بدرجہ احتجاج آوردہ وآں مفید فی الجملہ اصلیت اوست نہ چنانکہ نووی گفتہ کہ مسح رقبہ بدعت است و حدیثش موضوع وآنکہ ابن القیم در ہدی و مجد الدین در سفر السعادہ گفتہ اند کہ در مسح رقبہ البتہ حدیثی بصحت نرسیدہ انتہی پس مسلم است ولکن در صالح احتجاج صحت مشترط نباشد بلکہ حسن صالح حجیت است وہمچنیں حدیث ضعیف کہ کثرت طرقش موجب قوت گردد پس آں قسم حسن لغیرہ باشد بشرطیکہ معارض حدیث صحیح نبود
অর্থাৎ যদিও গর্দান মাসহের হাদীসটি সহীহ ও হাসান পর্যায়ের নয়, কিন্তু ইবনে হাজর রহ. “তালখিস” গ্রন্থে আনা হাদিসগুলো দলিল যোগ্য না হলেও ঘাড় মাসাহের বিষয়ের মূল ভিত্তি আছে বলে বুঝা যায়। সুতরাং শুধু ইমাম নববী রহ. বলেননি যে, গর্দান মাসহ বিদআদত, এবং তার হাদিস মাউজু তথা জাল, বরং ইবনুল কায়্যিম রহ. زاد المعاد فی هدي العباد গ্রন্থে এবং মজদুদ্দীন রহ. سفر السعاده গ্রন্থে বলেছেন যে, অবশ্যই গর্দান মাসহের হাদিস সহিহ এর স্থরে পৌছেনি ৷ এ কথাগুলো অবশ্য ঠিক ৷ কিন্তু প্রত্যেক হাদিস দলিলযোগ্য হওয়ার জন্য সহিহ হওয়া শর্ত নয়, বরং হাসান হাদিসও দলিলযোগ্য হতে পারে। যয়িফ হাদিস বিভিন্ন সনদে বর্ণিত হলে তা হাসান লিগায়রিহী হয়ে যায় ৷ শর্ত হলো তার বিপক্ষে সহীহ হাদিস না থাকতে হবে।
সূত্র: বুদুরুল আহিল্লাহ পৃ: ২৮
দেখুন আমরা তো বলছি না যে, ঘাড় মাসেহ করা ফরজ/সুন্নাত। সুতরাং উপরোক্তগুলো দ্বারা মুস্তাহাব প্রমাণিত।
সারকথা হলো, যে আমলের অস্তিত্ত্ব হাদিস আসারে বিদ্যমান তাকে বিদআত বলার অবকাশ নেই। সম্মানিত তিন ইমাম নিজেদের ঘাড় মাসেহ মতে মুস্তাহাব বলিনি, কিন্তু তারা এটাকে বিদআতও বলিনি। যদি তাদের কথা মেনেও নিই যে, হাদিসগুলো জয়িফ। জয়িফ হাদিস সম্পর্কে ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহ.) বলেন, “হালাল-হারামের বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে থাকি। তবে ফজিলতের ক্ষেত্রে নমনীয়তা অবল্বমন করি।” সূত্র : আল-আজকার,১১-১২
সুতরাং তাদের মতামতের চেয়ে জয়িফ হাদিসের ক্ষেত্রে ইমাম হাম্বল (রহ.) –এর মতকে আমরা অগ্রগণ্য মনে
করি।
والله اعلم بالصواب
আল্লাহপাকই সকল বিষয়ে সঠিক
জ্ঞানের অধিকারী।
উত্তর দিচ্ছেন, মুফতি মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাক
0 Comments:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন